গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি ঃ
ময়মনসিংহের গৌরীপুর শনিবার (১ আগস্ট/২০২০) ঈদের চামড়া বাজারে দামে ধস নেমেছে। খাসি চামড়া’র ক্রেতা মিলেনি। গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২শ থেকে ৩শ টাকা। অনেক এলাকায় মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী না যাওয়ায় মাটিতে পুঁতে রাখতে হয়েছে চামড়া।
এদিকে রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও গ্রামের আবুল হাসিমের পুত্র নেওয়াজ হোসেন জানান, বাড়িতে কেউ চামড়া কিনতে যায়নি। ফলে তিনি ৩টি গরুর চামড়া নিয়ে বাজারে আসেন। রিস্কা ভাড়া যাওয়া-আসা ৬শ টাকা। চামড়া বিক্রি করেছেন ৫শ ২০টাকা। খাজনা (সরকারি টোল) ৬০টাকা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মাটিতে পুঁতে রাখলে ১শ ৪০টাকা গচ্চা যেতো না। ২নং গৌরীপুর ইউনিয়নের মেসিডেঙ্গী গ্রামের মৌসুমী ব্যবসায়ী মোঃ কমল মিয়া ও বাচ্চু মিয়া জানান, ৫টি খাসির চামড়া এনেছে, কেউ কিনতে চায়নি। তাই ড্রেনে ফেলে দিয়েছি। ১লাখ ১৩হাজার টাকা মূল্যের ষাঁড়ের চামড়া বিক্রি হয়েছে ২৫০টাকায়। আর ৬টি চামড়া বিক্রি করা হয়েছে ১২শ টাকায়। বেকারকান্দা গ্রামের আবুল কাসেম ও লিটন মিয়া জানান, ২৯টি চামড়া কিনে এনেছিলেন। এখন কেউ দাম বলে না। বোকাইনগর ইউনিয়নের গড়পাড়া গ্রামের সামছুদ্দিনের পুত্র মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী আবুল মিয়া জানান, দু’জনে ১৭টি চামড়া কিনে ছিলেন। তাদের লস হয়েছে সাড়ে ৪হাজার টাকা। পৌর শহরের সতিশা গ্রামের আমজত আলী জানান, খাসির চামড়া মাগনা (মূল্যবিহীন) আর গরুর চামড়া ২শ টাকায় কিনেছি।
অপরদিকে গৌরীপুর উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের সিংহভাগ এলাকায় এবার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী যায়নি। দিনভর অপেক্ষা করে গরীবের চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলতে হয়েছে। রামগোপালপুর ইউনিয়নের গুঁজিখা গ্রামের মরম আলী জানান, কেউ চামড়া নিতে আসেনি। শোনেছি বাজারেও দাম কম, গরীবদের আড়াইশ টাকা দিয়ে দিয়েছি। চামড়াও মাটিতে পুঁতে ফেলেছি। বিশ^নাথপুর গ্রামের আবুল কাসেম জানান, খাসি’র চামড়া কেউ নেয়নি, মাটিতে পুঁতা ছাড়া উপায় ছিলো না।
চামড়া বাজারের সভাপতি আজিজুল ইসলাম রাঙা জানান, গত বছরের চেয়ে তিনভাগের একভাগ চামড় বাজারে এসেছে। বাজারে চামড়া কিনতে দুর-দুরান্ত থেকে কোন পাইকার আসেনি। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা এ কারণে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। খাসির সরকারি ইজারা ৫টাকা, টোল ফ্রি করে দিয়েছে, তবে সেই দামেও চামড়া বিক্রি করতে পারেনি।